যৌথ অভিযানে ২৮০ অপরাধী গ্রেফতার: বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কতটা নিয়ন্ত্রণে?
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশিত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে যে, গত ২০ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত দেশব্যাপী পরিচালিত যৌথ অভিযানে ২৮০ জন অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে প্রকাশিত এই বিজ্ঞপ্তিতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাদের চলমান প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জানিয়েছে, “যৌথ বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত উল্লেখযোগ্য অভিযানসমূহের সারসংক্ষেপ: ২০-২৬ মার্চ ঢাকা, ২৮ মার্চ ২০২৫ (শুক্রবার): দেশের চলমান পরিস্থিতিতে আইনশৃংখলা নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে দেশব্যাপী পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করে চলেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২০ থেকে ২৬ মার্চ ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদাতিক ডিভিশন ও স্বতন্ত্র ব্রিগেডের অধীনস্থ ইউনিটসমূহ কর্তৃক অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বেশকিছু যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সকল যৌথ অভিযানে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, একাধিক মামলার আসামি, ডাকাত দলের সদস্য, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী, ভেজাল খাদ্য দ্রব্য প্রস্তুতকারী, কিশোর গ্যাং সদস্য, জুলাই হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত আসামি এবং মাদক ব্যবসায়ীসহ মোট ২৮০ জন অপরাধীকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত অপরাধীদের নিকট হতে ১০টি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, ১৪৩টি বিভিন্ন ধরনের গোলাবারুদ, ককটেল বোমা, মাদকদ্রব্য, সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রকার দেশী ও বিদেশী অস্ত্র, পাসপোর্ট, চোরাই মোবাইল ফোন, ট্যাব, সিমকার্ড, স্বর্ণালংকার, ট্রলার, মোটরসাইকেল, ট্রাক, ড্রেজার, ভেকু, এক্সক্যাভেটর, ডাম্পার ও নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়। আটককৃতদের প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ এবং আইনি কার্যক্রম সম্পন্নের জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়াও, ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে নির্বিঘ্নে সড়কে যান চলাচল নিশ্চিতকরণ ও টিকিট কালোবাজারি রোধকল্পে সেনাবাহিনী বিশেষ টহল কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সাধারণ জনগণকে যেকোন সন্দেহজনক কার্যকলাপের বিষয়ে নিকটস্থ সেনা ক্যাম্পে তথ্য প্রদান করার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।”
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের অপরাধী রয়েছেন, যারা সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি এবং অন্যান্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত। উদ্ধারকৃত সামগ্রীর মধ্যে অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং মাদকদ্রব্যের পাশাপাশি চোরাই মালামালও রয়েছে। এছাড়া, আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরকে কেন্দ্র করে সড়ক পথে যান চলাচল সুষ্ঠু রাখতে এবং টিকিট কালোবাজারি রোধে বিশেষ টহল পরিচালনার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
সেনাবাহিনী জনগণের প্রতি সন্দেহজনক কার্যকলাপ সম্পর্কে তথ্য প্রদানের আহ্বান জানিয়েছে। তবে, এই অভিযানের ফলে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কতটা উন্নতি করেছে, তা নিয়ে স্বতন্ত্র কোনো মূল্যায়ন এখনও প্রকাশিত হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে অভিযান অব্যাহত থাকার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।