মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতির প্রতিক্রিয়ায় কানাডা কঠোর পদক্ষেপের পরিকল্পনা করছে। গ্লোবাল নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে (https://globalnews.ca/), এই বাণিজ্য সংকটে পটাশ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে, যা মার্কিন কৃষকদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় সার উৎপাদনের মূল উপাদান। কানাডা থেকে আমদানি করা পটাশের ওপর নির্ভরশীল আমেরিকার কৃষি খাত এই পরিস্থিতিতে চাপের মুখে পড়তে পারে।
গ্লোবাল নিউজ জানিয়েছে, আমেরিকায় ব্যবহৃত পটাশের ৮৫% আসে কানাডার সাসকাচেওয়ান প্রদেশ থেকে। এই নির্ভরতাকে কাজে লাগিয়ে অন্টারিওর প্রিমিয়ার ডগ ফোর্ড প্রস্তাব করেছেন যে, সাসকাচেওয়ানের প্রিমিয়ার স্কট মো-এর উচিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পটাশ, ইউরেনিয়াম এবং তেল রপ্তানি বন্ধ করার কথা বিবেচনা করা। ফোর্ড বলেছেন, “আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে আমেরিকা এর প্রভাব অনুভব করে। পটাশ ছাড়া তাদের কৃষি ব্যবস্থা টিকতে পারবে না।”
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ইতোমধ্যে মার্কিন পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। গ্লোবাল নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রুডো অশুল্কমূলক ব্যবস্থার কথাও উল্লেখ করেছেন, তবে পটাশ রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ করা হবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এদিকে, স্কট মো জানিয়েছেন, তার মন্ত্রিসভা বুধবার বৈঠকে বসে সব বিকল্প পর্যালোচনা করবে। তিনি বলেন, “ট্রাম্পের শুল্ক আমেরিকান কৃষকদের জন্য পটাশ ও জ্বালানির দাম বাড়িয়ে দেবে, যা তাদের জীবনযাত্রার খরচ বাড়াবে।”
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, মার্কিন কৃষি সংস্থা এবং কিছু রিপাবলিকান নেতা পটাশকে শুল্কের বাইরে রাখার দাবি জানিয়েছেন। তবে, কানাডার পটাশ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নিউট্রিয়েন সতর্ক করেছে যে শুল্কের খরচ শেষ পর্যন্ত মার্কিন কৃষকদেরই বহন করতে হবে। বিশ্বের পটাশ উৎপাদনের এক-তৃতীয়াংশ কানাডার হাতে থাকায় এই সংকট বৈশ্বিক বাজারেও প্রভাব ফেলতে পারে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, পটাশ রপ্তানি বন্ধ করা একটি চরম পদক্ষেপ হবে, যা উভয় দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। গ্লোবাল নিউজের তথ্যানুসারে, ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওয়ার্নার অ্যান্টওয়েলার বলেছেন, “এটি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে এবং কানাডার ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।”
এই উত্তেজনার মধ্যে বিশ্লেষকরা আশা করছেন, মার্কিন কৃষকদের ক্ষোভ ট্রাম্পকে শুল্ক শিথিল করতে বাধ্য করতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত, পটাশ নিয়ে এই বাণিজ্য যুদ্ধ কোন দিকে যাবে, তা অনিশ্চিত।
সূত্র: https://globalnews.ca