বাংলাদেশে ২৯ মিলিয়ন ডলারের একটি সহায়তা তহবিল নিয়ে সম্প্রতি ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই তহবিলের গন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে দাবি করেছেন যে, এই অর্থ বাংলাদেশের একটি অপরিচিত প্রতিষ্ঠানে পৌঁছেছে, যেখানে মাত্র দুজন কর্মী কাজ করেন। এ ঘটনায় বাংলাদেশ, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সহায়তা বন্ধের ঘোষণা এসেছে। বাংলাদেশি গণমাধ্যমগুলো এই বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যা থেকে জানা যাচ্ছে ঘটনার নানা দিক।
বাংলা ট্রিবিউন জানিয়েছে, ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময়ে বরাদ্দ করা ২৯ মিলিয়ন ডলারের গন্তব্য ছিল বাংলাদেশে একটি নামহীন প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানে মাত্র দুজন কর্মী কাজ করেন বলে ট্রাম্পের বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়েছে। দৈনিক ইত্তেফাক একইভাবে প্রকাশ করেছে যে, ট্রাম্পের মতে, এই অর্থ একটি অপরিচিত বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানে গেছে। এই ঘটনায় ট্রাম্প প্রশ্ন তুলেছেন, এত বড় অঙ্কের অর্থ কীভাবে এমন একটি প্রতিষ্ঠানে পৌঁছালো।
দি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ট্রাম্পের মন্তব্যে উঠে এসেছে যে, মাত্র দুই সদস্যের একটি বাংলাদেশি ফার্ম এই ২৯ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা পেয়েছে। এই খবর বাংলাদেশে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। যুগান্তর তাদের শিরোনামে প্রশ্ন তুলেছে, “বাংলাদেশে ২৯ মিলিয়ন ডলার কারা পেয়েছেন? যা বললেন ট্রাম্প”। তারা জানিয়েছে, ট্রাম্প এই অর্থের ব্যবহার নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানিয়েছে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী করার জন্য এই তহবিল বরাদ্দ করা হয়েছিল, কিন্তু ট্রাম্প এটি বাতিল করে দিয়েছেন। তারা আরও উল্লেখ করেছে যে, এই অর্থ দুজনের একটি প্রতিষ্ঠানে গেছে বলে ট্রাম্পের দাবি। দি ডেইলি ক্যাম্পাস প্রকাশ করেছে, ট্রাম্পের মতে, বাংলাদেশে রাজনীতি শক্তিশালী করতে ২ কোটি ৯০ লাখ ডলার অনুদান দেওয়া হয়েছিল, যা এখন বাতিল করা হয়েছে।
প্রথম আলো তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশ, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে প্রকল্পে অর্থায়ন বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা উল্লেখ করেছে, এই সিদ্ধান্তের পেছনে ট্রাম্পের সমালোচনা একটি বড় কারণ। সমকাল জানিয়েছে, ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী, বাংলাদেশে ২৯ মিলিয়ন ডলার দুই কর্মীর একটি প্রতিষ্ঠানে গিয়েছিল। এই খবরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
ঢাকা পোস্ট প্রশ্ন তুলেছে, “বাংলাদেশে ইউএসএইডের ২৯ মিলিয়ন ডলার কোন সংস্থা পেল?” তারা ট্রাম্পের বক্তব্যের ভিত্তিতে জানিয়েছে, এই অর্থের গন্তব্য নিয়ে স্পষ্টতা দরকার। ঢাকা মেইল প্রকাশ করেছে, বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ ২৯ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প যুক্তরাষ্ট্র বাতিল করেছে। জাগোনিউজ২৪ বাংলা জানিয়েছে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ উন্নয়নে এই অর্থায়ন বাতিল করা হয়েছে।
বার্তা২৪ তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশ, ভারত, নেপালসহ ৮টি দেশের আর্থিক সহায়তা বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। চ্যানেল ২৪ জানিয়েছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য বরাদ্দ এই অর্থায়ন বন্ধ করা হয়েছে। আজকের পত্রিকা ট্রাম্পের একটি উক্তি তুলে ধরেছে, “বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিকাঠামো শক্ত করা নিয়ে আমি কেন মাথা ঘামাব?” এই বক্তব্য থেকে তার অবস্থান স্পষ্ট হয়।
সময় নিউজ জানিয়েছে, বাংলাদেশ, ভারতসহ কয়েকটি দেশে আর্থিক সহায়তা বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন প্রকাশ করেছে, ঢাকা যুক্তরাষ্ট্রকে এই সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছে। তারা আরও জানিয়েছে, ট্রাম্প বাংলাদেশকে ২৯ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়া নিয়ে সমালোচনা করেছেন।
মানবজমিন জানিয়েছে, বাংলাদেশের রাজনীতি শক্তিশালী করা নিয়ে মার্কিন বরাদ্দের সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। দৈনিক জনকণ্ঠ প্রকাশ করেছে, ইউএসএইডের বরাদ্দ বাংলাদেশের জন্য ছিল বলে দাবি করা হলেও, ট্রাম্প এর বিপক্ষে জবাব দিয়েছেন। রাইজিংবিডি.কম জানিয়েছে, বাংলাদেশে পাঠানো ২৯ মিলিয়ন ডলার দুই কর্মীর প্রতিষ্ঠানে গিয়েছিল বলে ট্রাম্প দাবি করেছেন।
আমাদের সময়.কম প্রকাশ করেছে, ২১ মিলিয়ন ডলার ইউএসএইডের অনুদান বাতিল হয়েছে, এবং এ নিয়ে ভারত সরকারও মুখ খুলেছে। দি ডেইলি স্টার জানিয়েছে, ট্রাম্পের মতে, ২৯ মিলিয়ন ডলার মাত্র দুজনের একটি প্রতিষ্ঠানে গেছে। দি ডেইলি স্টার বাংলা আরও উল্লেখ করেছে, এই প্রতিষ্ঠানের নাম কেউ শোনেনি বলে ট্রাম্পের দাবি।
এনটিভি অনলাইন প্রশ্ন তুলেছে, “২৯ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে বাংলাদেশের কোন প্রতিষ্ঠান, যা বললেন ট্রাম্প”। দৈনিক ইনকিলাব জানিয়েছে, বাংলাদেশে পাঠানো ২৯ মিলিয়ন ডলার নিয়ে ট্রাম্প কটাক্ষ করেছেন। চ্যানেল আই প্রকাশ করেছে, দুই সদস্যের একটি অপরিচিত বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান এই ২৯ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে বলে ট্রাম্প দাবি করেছেন।
ভারতীয় গণমাধ্যমও এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, ট্রাম্প বলেছেন, “ভারত প্রচুর সুযোগসুবিধা নেয়, এবার আমাদের সাহায্য করুক”। তারা আরও উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ অনুদান ভারতের ঘাড়ে ফেলার চেষ্টা করছেন ট্রাম্প। এই সময় জানিয়েছে, ভারতের বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, “সরল বিশ্বাসে ইউএসএইডকে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল”।
টিভি৯ বাংলা প্রকাশ করেছে, ভোটার সংখ্যা বাড়াতে আমেরিকা টাকা ঢেলেছে, এবং সেই টাকা ভারতের বদলে বাংলাদেশ পেয়েছে। ইটিভি ভারত ওয়েস্ট বেঙ্গল জানিয়েছে, ভারতে নির্বাচনে মার্কিন তহবিলের কথা উল্লেখ করে ট্রাম্প তদন্তের দাবি তুলেছেন। এবিপি আনন্দা জানিয়েছে, ট্রাম্প বলেছেন, “চড়া শুল্ক নেয় ভারত, তাহলে আমরা কেন অনুদান দেব?”
সংবাদ প্রতিদিন প্রকাশ করেছে, মোদিকে হঠাতে বাইডেনের ‘ইন্ডিয়া ফান্ড’ ছিল বলে ট্রাম্প দাবি করেছেন। নিউজ১৮ বাংলা জানিয়েছে, ভারতের ভোটে ২১ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে আমেরিকা। দি ওয়াল উল্লেখ করেছে, ট্রাম্প বলেছেন, “ভারতে ভোট দানের হার বাড়াতে আমরা টাকা দেব কেন?”
উত্তরবঙ্গ সংবাদ জানিয়েছে, ভারতের বিদেশ মন্ত্রী বলেছে, “অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপ উদ্বেগের”। ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা প্রকাশ করেছে, ট্রাম্পের মন্তব্যে ভারতের বিদেশ মন্ত্রী উদ্বিগ্ন। এই ঘটনা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
এই সংবাদ প্রতিবেদনে বাংলাদেশি গণমাধ্যমের খবরের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যা থেকে এই বিতর্কের বিস্তৃত চিত্র ফুটে উঠেছে।