ঢাকায় পাহাড়ি ছাত্র-জনতার মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ, জলকামান এবং সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করেছে। এতে এক নারীসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
ঢাকার ঘটনা
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে ‘সংক্ষুব্ধ পাহাড়ি ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে সচিবালয়ের দিকে মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি হাইকোর্ট মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তাদের বাধা দেয়। মিছিলকারীরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে পুলিশ প্রথমে জলকামান ব্যবহার করে এবং পরে লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে। এতে এক নারীসহ কয়েকজন আহত হন।
পূর্ববর্তী হামলার পটভূমি
এর আগে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভবনের সামনে ‘সংক্ষুব্ধ পাহাড়ি ছাত্র-জনতা’র ওপর ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’ নামের একটি সংগঠনের নেতা-কর্মীরা হামলা চালায়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতদের মধ্যে রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা নামের এক শিক্ষার্থী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য।
পার্বত্য অঞ্চলে প্রতিবাদ
ঢাকায় হামলার ঘটনায় আজ (১৬ জানুয়ারি) রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে পৃথকভাবে বিক্ষোভ ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। রাঙামাটিতে দুপুর ১২টায় জিমনেসিয়াম মাঠের সামনে থেকে ‘সংক্ষুব্ধ পাহাড়ি ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা দাবি তোলেন—ঢাকায় হামলাকারীদের গ্রেপ্তার, আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা, এবং পাঠ্যপুস্তক থেকে বাদ দেওয়া গ্রাফিতি পুনর্বহাল। সমাবেশ শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। খাগড়াছড়িতে সকালে সরকারি কলেজ চত্বর থেকে মিছিল বের হয়, যা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা প্রদক্ষিণ শেষে চেঙ্গী স্কয়ারে গিয়ে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তারা পাহাড়িদের আন্দোলন দমনে সরকারি দমন-পীড়নের নিন্দা জানিয়ে বলেন, “পাহাড়িদের অধিকার আদায়ের লড়াই থামানো যাবে না।”
ঢাকা ও পার্বত্য চট্টগ্রামের এসব ঘটনার প্রেক্ষাপটে পাহাড়ি জনগণের ক্ষোভ আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। পুলিশের কঠোর অবস্থান এবং বিক্ষোভকারীদের দাবি নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা নিরসনের আহ্বান জানিয়েছে বিভিন্ন মহল।
সুত্র-প্রথম আলো/বাংলানিউজ২৪