বাংলাদেশে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালুর বিষয়ে আলোচনা করতে বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস।
প্রধান উপদেষ্টার অফিশিয়াল ও ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত এই ভার্চুয়াল বৈঠকে দুই পক্ষই বাংলাদেশে স্টারলিংক চালুর বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন রোহিঙ্গা সংকট ও বিশেষ অগ্রাধিকারের জন্য নিযুক্ত উচ্চপ্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (SDGs) প্রধান সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ। অন্যদিকে, স্পেসএক্সের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন কোম্পানির ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার এবং বৈশ্বিক সংযুক্তি পরামর্শক রিচার্ড গ্রিফিথস।
বাংলাদেশের জন্য স্টারলিংকের গুরুত্ব
বৈঠকে অধ্যাপক ইউনুস ও ইলন মাস্ক বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল, নারী উদ্যোক্তা ও যুবসমাজের জন্য উচ্চগতির ইন্টারনেটের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। স্টারলিংকের মাধ্যমে সুলভ মূল্যে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সম্ভব বলে উভয় পক্ষই মত দেন।
অধ্যাপক ইউনুস উল্লেখ করেন, “গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণফোন যেমন গ্রামীণ নারীদের ও তরুণদের বিশ্বব্যাপী সংযুক্ত করেছিল, তেমনি স্টারলিংকও তাদের নতুন এক দিগন্তের সন্ধান দিতে পারে।”
মাস্কের ইতিবাচক সাড়া
ইলন মাস্ক এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, তিনি বহুদিন ধরেই গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণ ভিলেজ ফোন প্রকল্প সম্পর্কে জানেন এবং এগুলোর দারিদ্র্য বিমোচনে ভূমিকা সম্পর্কে অবগত।
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের মতো দেশে স্টারলিংক চালু হলে ডিজিটাল সংযুক্তির মাধ্যমে উদ্ভাবন ও অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি আরও ত্বরান্বিত হবে।”
বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ
অধ্যাপক ইউনুস বাংলাদেশে স্টারলিংক সেবা উদ্বোধনের সম্ভাব্য আয়োজন উপলক্ষে ইলন মাস্ককে সফরের আমন্ত্রণ জানান। মাস্ক এই আমন্ত্রণের ইতিবাচক উত্তর দিয়ে বলেন, “আমি এটি নিয়ে আগ্রহী।”
পরবর্তী পদক্ষেপ
বৈঠকে উভয় পক্ষ যত দ্রুত সম্ভব উদ্যোগটি বাস্তবায়নের বিষয়ে একমত হন এবং কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয় উচ্চপ্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান, লরেন ড্রেয়ার ও রিচার্ড গ্রিফিথসকে।
এটি বাংলাদেশে উন্নতমানের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সংযোগ চালুর পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা দেশের ডিজিটাল সংযুক্তি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উদ্ভাবনকে আরও ত্বরান্বিত করবে।