আদিবাসী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা, ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
সম্প্রতি ঢাকার মতিঝিল এলাকায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভবনের সামনে “সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার” মিছিলের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম নিয়েছে। এই হামলায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন এবং ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির সদ্য বহিষ্কৃত এক সদস্যও অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।
মামলার বিস্তারিত জানিয়ে মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার থানায় মামলাটি দাখিল করেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের ঢাকা মহানগর ইউনিটের সভাপতি জগদীশ চাকমা। মামলায় আরও অন্তত ২০০-৩০০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি জানান, হামলার সাথে জড়িতদের মধ্যে আরিফ আল খবির ও মো. আব্বাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তে, অভিযুক্তদের মধ্যে একজন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সাকিবকে হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জাতীয় নাগরিক কমিটি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে যে, সাকিবের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড তাদের আচরণবিধি ও মূলনীতির পরিপন্থী।
এদিকে, স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে যে, এই হামলার পেছনে রয়েছে পাঠ্যপুস্তকে আদিবাসী শব্দসংবলিত গ্রাফিতি রাখার বিষয়টি নিয়ে বিরোধ। আদিবাসী ছাত্র-জনতা তাদের সাংস্কৃতিক ও জাতিগত পরিচয়ের স্বীকৃতি দাবি করতে মিছিলটি আয়োজন করেছিল, যার পরেই সহিংসতা ঘটে।
সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতিমধ্যে পরিস্থিতি শান্ত করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তবে, এই ঘটনায় আস্থাহীনতা ও বিভাজন বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে সংলাপ ও সমঝোতার আহ্বান জানানো হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সমাজের প্রতিটি অংশকে একত্রিত করে সংলাপ ও ন্যায়বিচারের মাধ্যমে এই ধরনের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।
এই ঘটনাটি দেশের বহুজাতি ও সংস্কৃতির ঐক্য বজায় রাখতে এবং সকল সম্প্রদায়ের অধিকার সুরক্ষিত রাখতে আরও সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছে। বিশেষভাবে, আদিবাসী সম্প্রদায়ের ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা ও স্বীকৃতি নিশ্চিত করতে একটি সুসংগঠিত শিক্ষাব্যবস্থা প্রয়োজন।
এই ঘটনার পর, আদিবাসী সম্প্রদায়ের সদস্যরা আশা করছেন যে, আইন ও প্রশাসন ন্যায়বিচারের মাধ্যমে এই সহিংসতার সমাধান করবে এবং সকল পক্ষের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হবে।