ডয়েচে ভেলের প্রকাসিত খবরে বলা হয় প্রতি বছরের ন্যায় এবারো কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান হলো। বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতা বলেন, ”বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনা ও ভারতীয় জনগণ আমাদের যে সমর্থন করেছিলেন, সামরিক সহায়তা দিয়েছিলেন, তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।”
খবরে আরো বলা হয় প্রতিবছর ১৬ ডিসেম্বর ফোর্ট উইলিয়ামে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান হয়। এই দিনই ভারতীয় সেনা এবং বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সেনা। ভারতে বিজয় দিবসের প্রধান অনুষ্ঠান হয় ফোর্ট উইলিয়ামে। উদ্য়োক্তা ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কম্যান্ড। ১৯৭১-এর যুদ্ধে শামিল বেশ কিছু ভারতীয় সেনা অফিসারও ছিলেন এই অনুষ্ঠানে।
প্রতিবারই বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিধিদল এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এবারও বাংলাদেশ থেকে ১৭জন প্রতিনিধির দল এসেছেন। সেখানে আছেন মুক্তিযোদ্ধা, তাদের পরিবার এবং সাবেক সেনা অফিসাররা। এই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিনুর রহমান। বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের তরফেও বিজয় স্মারকে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় শহিদদের।
এই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিনুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ”বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনা ও ভারতীয় জনগণ যে আমাদের সমর্থন করেছিলেন, সামরিক সহায়তা দিয়েছিলেন, তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। যে বন্ধুত্ব রচিত হয়েছে, তা নিশ্চিত আজীবন চলবে।”
বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন ভারতের অবসরপ্রাপ্ত লেফটোন্যান্ট জেনারেল উৎপল ভট্টাচার্য। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর তিনি ঢাকায় ছিলেন। ডিডাব্লিউকে তিনি বলেছেন, ”ভারত থেকে তিনদিক দিয়ে সেনা ঢাকায় পৌঁছায়। আমরা গেছিলাম ত্রিপুরার আগরতলা থেকে গঙ্গানগর, আখাউড়া, ব্রাক্ষ্মণবেড়িয়া, আসুগঞ্জ, ভৈরববাজার, নারায়ণগঞ্জ হয়ে ঢাকায়।’
উৎপল ভট্টাচার্য আরো বলেন,” আমাদের তিনটি নদী পার হতে হয়েছিল। তিতাস, মেঘনা এবং শীতলক্ষ্যা। ভারত থেকে যেদিক দিয়েই যান না কেন, ঢাকা যেতে হলে অন্তত তিনটি নদী পড়বে। আমরা দ্রুত ঢাকা পৌঁছাতে চেয়েছিলাম এবং সেটাই হয়েছিল। এই যাওয়ার ক্ষেত্রে সবসময় শত্রুসেনাকে পরাজিত করে যেতে হবে, তার মানে নেই। তাদের পাশ কাটিয়েও যেতে হয়। এর ফলে তারা যখন বোঝে, তাদের সামনে ও পিছনে আমরা আছি, তখন তারা প্যানিক করে।”
সোমবার ফোর্ট উইলিয়ামের অনুষ্ঠান সম্পর্কে তিনি বলেন, ”অন্যবার বাংলাদেশ থেকে বড় প্রতিনিধিদল আসে। এবার তুলনায় ছোট প্রতিনিধিদল এসেছিল। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব ঢাকা গিয়ে প্রতিনিধিদল পাঠানোর অনুরোধ করেছিলেন। এবার আটজন মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পরিবারের মানুষ এসেছিলেন এবং দুইজন সেনা অফিসারও ছিলেন।”
দিল্লিতে ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বিজয় দিবস উপলক্ষে ফুলের স্তবক দিয়ে শহিদদের স্মরণ করেন।