হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এই ভাইরাসটি নতুন নয়, এবং এটি সাধারণ সর্দি-কাশির মতো লক্ষণ সৃষ্টি করে। তবে শিশু ও বয়স্কদের জন্য কিছুটা বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন তৈরি হচ্ছে
প্রধানমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেছেন, এইচএমপিভি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি জানান, “এই ভাইরাস বাংলাদেশে অনেকদিন ধরেই রয়েছে। এটি কোভিডের মতো মারাত্মক নয় এবং মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনাও নেই। তবে শিশু ও বয়স্কদের জন্য সতর্ক থাকা জরুরি।”

তিনি আরও বলেন, এই ভাইরাসের চিকিৎসার জন্য একটি ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন প্রস্তুত করা হচ্ছে, যা মূলত সাধারণ ফ্লু বা সর্দিজাতীয় রোগের মতোই হবে।
সীমান্তে সতর্কতার প্রয়োজন নেই
অধ্যাপক সায়েদুরের মতে, এই ভাইরাস সীমান্তে সতর্কতার মতো কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে না। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “মাস্ক পরা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা সাধারণ সুরক্ষার জন্য যথেষ্ট।”

চীন ও ভারতের পরিস্থিতি
চীনে শীতকালীন মৌসুমে এইচএমপিভি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিশেষ করে শিশুরা এতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। চীনের পর ভারতের কর্ণাটকে আট মাসের এক শিশুর শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত করা হয়। ভারতের সরকারও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার পরামর্শ দিয়েছে।

বাংলাদেশের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, বাংলাদেশে এই ভাইরাস নতুন নয়। এ নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই বলে জানিয়েছেন আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন।

তিনি বলেন, “এই ভাইরাসটি পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই রয়েছে। এটা নতুন কোনো বিষয় নয়। তবে শিশু ও বয়স্করা কিছুটা বেশি ঝুঁকিতে থাকায় তাদের জন্য বাড়তি সতর্কতা জরুরি। আগের মতোই মাস্ক পরা, হাত ধোয়া এবং অসুস্থ ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা উচিত।”

এইচএমপিভি সাধারণত ঠাণ্ডা, সর্দিকাশি, জ্বর, এবং শ্বাসকষ্টের মতো লক্ষণ সৃষ্টি করে। যদিও লক্ষণগুলো সাধারণত মৃদু হয়, তবে শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়ার মতো জটিলতা দেখা দিতে পারে। কোমর্বিডিটি থাকা ব্যক্তিদের জন্য এটি কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে হাত ধোয়া, মাস্ক পরা, এবং সর্দিজাতীয় রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

সূত্র:-রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) , চীনা ও ভারতীয় স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version