জার্মানির উগ্র ডানপন্থি রাজনৈতিক দল অলটারনেটিভ ফর ডয়চল্যান্ড (এএফডি)-কে সমর্থন জানিয়ে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছেন মার্কিন টেক-বিলিয়নিয়ার ইলন মাস্ক। জার্মান সংবাদমাধ্যম *ভেল্ট আম সনটাগ*-এ প্রকাশিত একটি মতামত কলামে মাস্ক এএফডিকে জার্মানির “শেষ আশার আলো” বলে অভিহিত করেন। 

এই সমর্থন এমন এক সময় এসেছে, যখন জার্মানির মধ্যবর্তী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা চরমে।  মাস্কের এই অবস্থান জার্মান রাজনীতিতে অভ্যন্তরীণ হস্তক্ষেপ হিসেবে সমালোচিত হয়েছে। 

ইলন মাস্ক  তার কলামে দাবি করেন, “এএফডিকে কট্টর ডানপন্থি হিসেবে তুলে ধরা সম্পূর্ণ মিথ্যা।” তিনি দলটির প্রধান আলিসে ভিডেলের শ্রীলঙ্কান সমলিঙ্গের সঙ্গীর উদাহরণ দিয়ে দলটির বৈচিত্র্য ও সহনশীলতা প্রমাণের চেষ্টা করেন। মাস্ক আরও বলেন, “এএফডি জার্মানির অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ, অর্থনীতির পুনরুদ্ধার এবং জ্বালানি সরবরাহ বিষয়ে কার্যকর নীতি প্রণয়ন করছে।” 

তার মতে, এএফডি “রাজনৈতিক শুদ্ধতার” বাইরে গিয়ে বাস্তব সমস্যার সমাধান করছে, যা বর্তমান জার্মান সমাজের একটি অংশের চাওয়া পাওয়ার প্রতিফলন। তিনি বলেন, “এটি কোনো জেনোফোবিক অবস্থান নয় বরং জার্মানির সংস্কৃতি ও নিরাপত্তা সুরক্ষার  প্রয়াস।” 

মাস্কের এই কলামের পরই *ভেল্ট আম সনটাগ*-এর মতামত বিভাগের সম্পাদক ইভা মারিয়ে কোগেল পদত্যাগ করেন। এক্সে (পূর্বে টুইটার) তিনি তার পদত্যাগের ঘোষণা দেন। একইসঙ্গে, সংবাদমাধ্যমটির ভবিষ্যৎ সম্পাদক ইয়ান ফিলিপ বুরগার্ড মাস্কের মতামতের বিরোধিতা করে বলেন, “সমস্যার বিশ্লেষণ সঠিক হলেও সমাধানে একমাত্র এএফডি-কে নির্ভর করা বড় ভুল।” 

মাস্কের মন্তব্য নিয়ে জার্মানির রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে যা জার্মানির আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিনত হয়েছে । রক্ষণশীল সিডিইউ দলের সাংসদ এবং সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েনস স্ফান বলেন, “এএফডি ন্যাটো থেকে বের হতে চায়, রাশিয়াপন্থী এবং ইউরো জোন ত্যাগের পক্ষে।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, “যুক্তরাষ্ট্র কি এমন একটি জার্মানি চায়, যা রাশিয়ার দিকে ঝুঁকে পড়বে?” 

বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু   মাস্কের এই সমর্থন জার্মানির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে মার্কিন হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত হিসেবে সমালোচিত হয়েছে জার্মান রাজনীতিতে ।

 রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সমর্থন এএফডির প্রতি জনমতের একটি অংশকে প্রভাবিত করতে পারে, যা নির্বাচন পূর্ববর্তী রাজনৈতিক ভারসাম্যে পরিবর্তন আনতে পারে। 

জার্মান রাজনীতিতে মাস্কের এই ভূমিকা কতটা প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে এটি স্পষ্ট যে, এই ঘটনা ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক আলোচনার বিষয়ে রুপান্তরিত হয় ।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version