লালমনিরহাটে অনলাইন জুয়ার চক্র গ্রেফতার, কীভাবে চলছিল অবৈধ কার্যক্রম?

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা গোয়েন্দা শাখার অভিযানে চারজন গ্রেফতার, উদ্ধার ৬টি মোবাইল ও ১২৫টি সিম কার্ড

লালমনিরহাট, ২ জুন ২০২৫: লালমনিরহাট জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) গত ৩১ মে ২০২৫ তারিখে একটি অভিযান চালিয়ে অনলাইন জুয়া ও অবৈধ লেনদেনের সঙ্গে জড়িত একটি চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। অভিযানে তাদের কাছ থেকে জুয়া ও অবৈধ লেনদেনে ব্যবহৃত ছয়টি মোবাইল ফোন এবং ১২৫টি সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় সাইবার সুরক্ষা আইন ২০২৫-এর আওতায় আদিতমারী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

জেলা গোয়েন্দা শাখার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “গত ৩১/০৫/২০২৫ খ্রিঃ বিকাল ১৯:৪৫ ঘটিকার সময় জেলা গোয়েন্দা শাখা, লালমনিরহাট এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন যে, আদিতমারী থানাধীন কমলাবাড়ী ইউপি এলাকার ০৩ নং ওয়ার্ডস্থ কদমতলা বাজার হইতে চন্দনপাট সরকার পাড়া গ্রাম গামী কাঁচা রাস্তার কদমতলা নামীয় ব্রীজের উপর একজন ব্যক্তি অবস্থান করিয়া মোবাইলে অনলাইন জুয়ার এ্যাপস এর মাধ্যমে জুয়া খেলার জন্য ভিন্ন ভিন্ন আইডি কার্ড দিয়ে খোলা নগদ/বিকাশ এ্যাকাউন্ট এর সিম কার্ড যুব সমাজের মাঝে অনলাইনে মোবাইলে জুয়া খোলার জন্য বিক্রয় ও নিজেও মোবাইলে জুয়া খেলছে।”

অভিযানের প্রথম ধাপে গোয়েন্দা শাখার দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে মো. ইসমাইল হোসেন রিপন (২০) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তীতে মো. মাহবুবুর রহমান মাহাবুব (৪০), মো. রেজাউল করিম (৩২) এবং মো. সজিব মিয়া (২২) নামে আরও তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা লালমনিরহাটের আদিতমারী ও কালীগঞ্জ থানার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, “তাদের নিকট হতে জুয়া ও অবৈধ লেনদেনে ব্যবহৃত ০৬ টি মোবাইল ফোন ও ১২৫টি সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মোবাইল গুলোতে অনলাইন জুয়া খেলার এপ্লিকেশন-7DGAME, QQEE.COM, NADAD777, KK23, L89, BK33, PPVIP ইন্সটল করা আছে এবং সিম কার্ড গুলোতে নগদ, বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলা আছে।”

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে সাইবার সুরক্ষা আইন ২০২৫-এর আওতায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অভিযানে জব্দকৃত মোবাইল ফোন ও সিম কার্ডগুলোতে থাকা অ্যাপ্লিকেশন এবং অ্যাকাউন্টগুলোর মাধ্যমে যুব সমাজকে অনলাইন জুয়ার দিকে প্ররোচিত করা হচ্ছিল বলে গোয়েন্দা শাখার দাবি।

এ ঘটনা স্থানীয়ভাবে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। স্থানীয়রা মনে করছেন, এ ধরনের অভিযান অবৈধ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে, অনলাইন জুয়ার মতো অপরাধের বিস্তার রোধে আরও কঠোর পদক্ষেপ এবং সামাজিক সচেতনতার প্রয়োজনীয়তার কথাও উঠে এসেছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version