ডা. আব্দুন নূর তুষারের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে কোটা বনাম মেধার বিতর্ক
বিশিষ্ট বাংলাদেশি ব্যক্তিত্ব, বিতার্কিক, উপস্থাপক ও লেখক ডা. আব্দুন নূর তুষার সম্প্রতি একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তার এই পোস্টে কোটা ব্যবস্থার বিপরীতে মেধার প্রাধান্য নিয়ে বিতর্ক উসকে দেওয়া হয়েছে, যা রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ডা. তুষার তার পোস্টে লিখেছেন, “তারা যে ঘাস পছন্দ করেন – এটা পরিস্কার। আগের তিনশ আসন যদি সবার জন্য উন্মুক্ত হয় তাহলে ওখানে একজন নারী থাকলেই সংসদে ৩০১ জন নারী। এগুলো সংস্কার নাকি নিরেট উজবুকি? একজন সংরক্ষিত নারী প্রধানমন্ত্রী দিলেই তো আগের দুই নেত্রীকেই আমরা সংসদে রাখতে পারতাম। একজন আসল আর একজন কোটা। কোটা না মেধা – বলে বলে এখন তিনশ নারীর কোটা?”
তার এই বক্তব্যে সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর জন্য সংরক্ষিত আসনের প্রকৃতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। তিনি পরামর্শ দিয়েছেন যে, সাধারণ আসনগুলো যদি সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়, তাহলেও নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব। তবে, তিনি সংরক্ষিত আসনের বর্তমান পদ্ধতিকে ‘উজবুকি’ হিসেবে উল্লেখ করে এর সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার দিকে ইঙ্গিত করেছেন।
এই পোস্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে ডা. তুষার প্রশ্ন তুলেছেন, সংরক্ষিত আসনের মাধ্যমে নারী নেত্রীদের সংসদে অন্তর্ভুক্ত করা কি প্রকৃত মেধার প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে, নাকি এটি কেবল কোটা পূরণের প্রক্রিয়া। তিনি উদাহরণ হিসেবে বলেছেন, “একজন সংরক্ষিত নারী প্রধানমন্ত্রী দিলেই তো আগের দুই নেত্রীকেই আমরা সংসদে রাখতে পারতাম। একজন আসল আর একজন কোটা।” এই মন্তব্যে তিনি মেধা ও কোটার মধ্যে একটি দ্বন্দ্ব তুলে ধরেছেন।
তার বক্তব্যের শেষাংশে তিনি বর্তমান ব্যবস্থার সমালোচনা করে বলেছেন, “কোটা না মেধা – বলে বলে এখন তিনশ নারীর কোটা?” এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা এবং এর প্রয়োগ নিয়ে বিতর্কের দিকে ইঙ্গিত করেছেন।
এই পোস্টটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কেউ কেউ ডা. তুষারের সঙ্গে একমত হয়ে কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন, আবার কেউ কেউ মনে করছেন, নারীদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ বাড়াতে সংরক্ষিত আসন অপরিহার্য। তবে, এই বিষয়ে সরকারি বা রাজনৈতিক মহল থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকদের মতে, সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর জন্য কোটা ব্যবস্থা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলেও, এর প্রয়োগ ও কার্যকারিতা নিয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকবে। ডা. তুষারের এই পোস্ট সেই আলোচনাকে নতুন মাত্রা দিয়েছে।