যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি বৈশ্বিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে একটি বড় পদক্ষেপ নিয়েছেন, যা বিশ্বব্যাপী বাজারে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
সিএনএন জানিয়েছে, ট্রাম্প যে দিনটিতে বৈশ্বিক বাণিজ্যের উপর সম্পূর্ণ ট্যারিফ আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন, সেটি ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। স্টিফেন কলিনসনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে তিনি সঠিক বলে মনে করছেন, কারণ এটি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষার একটি কৌশল হিসেবে দেখা যাচ্ছে। এই ট্যারিফ নীতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কের গতিপথকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করতে পারে। সিএনএন আরও উল্লেখ করেছে যে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই ঘোষণা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক পদক্ষেপও শুরু করেছে। অ্যান্টোয়নেট র্যাডফোর্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প তার প্রশাসনের নতুন সদস্যদের নিয়োগের পাশাপাশি এই ট্যারিফ পরিকল্পনা উন্মোচন করেছেন, যা তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির একটি অংশ। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তিনি আমেরিকান শিল্প ও কর্মসংস্থানকে সুরক্ষা দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছেন বলে দাবি করেছেন।
সিএনবিসি থেকে স্যাম মেরেডিথের প্রতিবেদনে জানা যায়, ট্রাম্পের ঘোষিত ট্যারিফ নীতি কানাডা এবং মেক্সিকোর মতো প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য এখন পর্যন্ত কিছুটা স্বস্তির কারণ হয়েছে। এই দুই দেশের উপর থেকে ট্যারিফ আরোপের ক্ষেত্রে কিছু ছাড় দেওয়া হয়েছে, যা অটোমোবাইল শিল্পের জন্য অপ্রত্যাশিতভাবে স্থিতিশীলতা এনেছে। সিএনবিসি উল্লেখ করেছে, বড় অটো কোম্পানিগুলো এই পরিস্থিতিতে তাদের সাপ্লাই চেইন এবং উৎপাদন কার্যক্রমকে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। তবে, এই ছাড় কতদিন স্থায়ী হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতি অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে যেসব দেশ এই ছাড়ের আওতায় পড়েনি।
রয়টার্স জানিয়েছে, ট্রাম্পের ট্যারিফ ঘোষণা বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি ধাক্কার সৃষ্টি করেছে। এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপ বৈশ্বিক বাণিজ্যে একটি নতুন যুদ্ধের সূচনা করতে পারে। ট্রাম্পের এই নীতি বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে, কারণ এটি তাদের রপ্তানি বাজার এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার উপর প্রভাব ফেলতে পারে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই ট্যারিফ শক বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খল এবং বাণিজ্য নেটওয়ার্ককে পুনর্বিন্যাস করতে বাধ্য করতে পারে। এই পরিস্থিতিতে অনেক দেশ প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে, যা বাণিজ্য যুদ্ধকে আরও তীব্র করে তুলতে পারে।
ইয়াহু থেকে কারেন ফ্রিয়ারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের ট্যারিফ ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে বড় ধরনের পতন দেখা গেছে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ এবং নাসডাক সূচক উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, এবং ডাও জোন্স সূচক ১,০০০ পয়েন্টের বেশি নিচে নেমে গেছে। এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ট্রাম্পের ট্যারিফ নীতি বিশ্বব্যাপী বাজারে আঘাত হেনেছে, যার ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ইয়াহু জানিয়েছে, এই ট্যারিফের প্রভাব শুধু যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি বিশ্বের অন্যান্য বাজারেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতি অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
সিএনএন-এর প্রতিবেদন থেকে বোঝা যায়, ট্রাম্প এই ট্যারিফ নীতির মাধ্যমে আমেরিকান অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছেন। তবে, রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, এটি বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। সিএনবিসি উল্লেখ করেছে যে, কানাডা এবং মেক্সিকোর মতো দেশগুলো এখনও কিছুটা সুরক্ষিত থাকলেও, অন্যান্য দেশের জন্য এই নীতি চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। ইয়াহুর প্রতিবেদন থেকে স্পষ্ট যে, এই ঘোষণার প্রভাব আর্থিক বাজারে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।
এই ট্যারিফ নীতি বাস্তবায়নের ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়তে পারে। সিএনএন জানিয়েছে, ট্রাম্পের প্রশাসন এই পরিকল্পনাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে। অন্যদিকে, রয়টার্সের প্রতিবেদন ইঙ্গিত দেয় যে, অনেক দেশ এর বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। সিএনবিসি-র তথ্য অনুযায়ী, অটো শিল্পের মতো কিছু খাত এখনও স্থিতিশীল থাকলেও, এই স্থিতিশীলতা কতদিন টিকবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ইয়াহুর প্রতিবেদন থেকে বোঝা যায়, বিনিয়োগকারীরা এই পরিস্থিতিতে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।
ট্রাম্পের ট্যারিফ ঘোষণা বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য ও অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সিএনএন-এর মতে, এটি আমেরিকার অর্থনৈতিক কৌশলের একটি অংশ। রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি বিশ্বে বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি করেছে। সিএনবিসি-র তথ্য অনুযায়ী, কিছু দেশ এখনও সুরক্ষিত থাকলেও, পরিস্থিতি অনিশ্চিত। ইয়াহুর প্রতিবেদন ইঙ্গিত দেয়, বাজারে এর প্রভাব ইতিমধ্যে দৃশ্যমান। এই ঘোষণা ভবিষ্যতে কীভাবে বিশ্ব অর্থনীতিকে প্রভাবিত করবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে, এটি নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।