তিস্তা চুক্তির অমীমাংসিত বিষয়, সীমান্ত হত্যা ও কৌশলগত অংশীদারিত্বের মতো বিষয়গুলো ভবিষ্যতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। ভবিষ্যতে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধানের সম্ভাবনা রয়েছে, তবে তিস্তা অঞ্চলের জনগণের জীবনমান উন্নয়নের জন্য দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
প্রথম আলো জানায়, বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান নদী তিস্তা রক্ষার দাবিতে উত্তরাঞ্চলে ব্যাপক গণপথযাত্রা শুরু হয়েছে। “জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই” স্লোগানে বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন, রাজনৈতিক কর্মী ও সাধারণ জনগণ রাজপথে নেমেছে। তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা জানান, নদীর নাব্যতা সংকট, পানির অভাব ও অব্যবস্থাপনার কারণে তাদের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। কৃষি নির্ভর এই অঞ্চলে পানির অভাবে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, ফলে কৃষকদের আয় কমে যাচ্ছে এবং সাধারণ মানুষের জীবিকা সংকটে পড়ছে। আন্দোলনকারীরা সরকারের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছেন।
অন্যদিকে, ডেইলি জনকণ্ঠ জানায়, বাংলাদেশ-চীন নতুন কৌশলগত সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে ভারতের কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক মহলে প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনায় চীনের সম্পৃক্ততা ভারতীয় কৌশলগত অবস্থানে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। ভারতের উদ্বেগের কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ-চীন সহযোগিতায় নদী ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ভারতের প্রচলিত কৌশলে প্রভাব পড়তে পারে। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, বাংলাদেশ কূটনৈতিকভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় নিচ্ছে, যেখানে চীনের বিনিয়োগ তিস্তা প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।


বাংলাদেশ প্রতিদিন শিরোনামে উল্লেখ করেছে, “বন্ধুত্ব চাইলে পানি দিন, সীমান্তে হত্যা বন্ধ করুন”। সাধারণ জনগণ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো ভারতকে আহ্বান জানিয়েছে, যদি প্রকৃত বন্ধুত্ব বজায় রাখতে চায়, তবে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত করা এবং সীমান্তে হত্যা বন্ধ করা জরুরি। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হলে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানো জরুরি। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, পানি সংকটের কারণে কৃষি ও মৎস্য সম্পদে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে, যার প্রভাব সরাসরি দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় পড়ছে।


এছাড়া, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম জানায়, তিস্তা রক্ষা আন্দোলনে সাধারণ মানুষের ব্যাপক সাড়া লক্ষ করা গেছে। তিস্তা পাড়ে আয়োজিত গণপথযাত্রায় জনতার ঢল নেমেছে, যেখানে স্থানীয় কৃষক, মৎস্যজীবী এবং পরিবেশকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছেন। বক্তারা দাবি জানিয়েছেন, তিস্তা নদীকে রক্ষা করতে সরকারকে দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন, কৃষি বিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, নদীর পানির ন্যায্যতা নিশ্চিত করা না গেলে এ অঞ্চলের অর্থনীতি স্থায়ী ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version