বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে হাসনাত আবদুল্লাহর ভূমিকা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে হাসনাতের ভূমিকা সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন, যা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।

সারজিস আলম তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “আশেপাশে এমন অনেক শত্রু আছে যারা সুযোগ পেলেই খুন করতে দ্বিধা করবে না। তা জানা সত্ত্বেও জনতার মাঝে ঢুকে পরিস্থিতি সামলানোর সাহস খুব কম মানুষই দেখিয়েছে, আর এই সাহস দেখিয়েছে হাসনাত আবদুল্লাহ।”

অতীতের প্রসঙ্গ

সারজিস আলম বলেন, গত জুলাইয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুলিশের টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেডের মুখেও যখন ছাত্ররা দিকবিদিক ছোটাছুটি করছিল, তখন হাসনাত আবদুল্লাহ স্রোতের বিপরীতে এগিয়ে গিয়ে ঘোষণা দিয়েছিল, “We are open to be killed”। তার দাবি, সেই সময়ও আন্দোলনের প্রথম সারিতে ছিলেন হাসনাত, যখন অন্যরা নিরাপদ আশ্রয়ের চেষ্টা করছিল।

এছাড়া তিনি বলেন, “এই ছেলেটাই সর্বপ্রথম সচিবালয়ে আনসার লীগের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামে এবং পরবর্তীতে ঐক্যবদ্ধ চেষ্টায় সচিবালয় অনেকটাই সুরক্ষিত হয়ে উঠে।”

সমালোচনা ও প্রশংসা

সারজিস আলমের মতে, হাসনাত আবদুল্লাহর সমস্যা হলো তার ‘মাথা গরম’ স্বভাব, কিন্তু তিনি সবসময় বড় পরিসরে চিন্তা করেন এবং সংকটের মুহূর্তে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, “হাসনাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, সে কখনোই নিরাপদ অবস্থানে থাকতে চায় না, বরং যে কোনো পরিস্থিতি সমাধানের জন্য ছুটে যায়।”

তবে তার এই ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ তাকে সাহসী নেতা হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ তার ‘তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রবণতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।

সারজিস আলম তার পোস্টে আরও উল্লেখ করেন, “দিনশেষে রক্ত আর ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত নতুন স্বাধীনতা রক্ষা করতে হাসনাতরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।”

প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ

হাসনাত আবদুল্লাহকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ইতিবাচক ও নেতিবাচক আলোচনা চলছে। সমর্থকরা তার সাহসিকতাকে প্রশংসা করছেন, অন্যদিকে সমালোচকদের মতে, তার সিদ্ধান্তের কারণে অনেক সময় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে যায়।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ছাত্র রাজনীতির বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে হাসনাতের মতো তরুণ নেতাদের ভূমিকা ভবিষ্যতে আন্দোলনের গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

তবে হাসনাত আবদুল্লাহ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version