যুগান্তর পত্রিকার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বিএনপি তাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি আরও জোরদার করতে বিতর্কিত ব্যক্তিদের একটি তালিকা তৈরি করতে শুরু করেছে। এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে সেইসব ব্যক্তি, যারা বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বে ছিলেন এবং তারা আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সহায়তা করেছেন। এর মধ্যে কিছু শিক্ষক এবং আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের পদধারী ব্যক্তিরাও রয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তালিকায় বিতর্কিত ব্যক্তির উপস্থিতি
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্প্রতি দলের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে বিতর্কিতদের তালিকা তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন। বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদও উপস্থিত ছিলেন। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই বিতর্কিত ব্যক্তিদের নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হলে, তা চিহ্নিত করে উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য তৃণমূল নেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সাংগঠনিক কমিটি গঠন ও পুনর্গঠন
বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রমও চলছে। যুগান্তর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দলের হাইকমান্ড সারা দেশের মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা, পৌর ও ইউনিয়ন কমিটি দ্রুত পুনর্গঠনের নির্দেশনা দিয়েছেন। দলটি তাগিদ দিয়েছে, এসব কমিটি কাউন্সিলের মাধ্যমে গঠন করতে হবে এবং দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে। ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল জানিয়েছেন, এসব কমিটি গঠনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।
ভোটার তালিকা হালনাগাদে বিতর্কিতদের চিহ্নিতকরণ
বৈঠকে ভোটার তালিকা হালনাগাদ নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং বিতর্কিত ও দুর্নীতিবাজ শিক্ষকদের চিহ্নিত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। গত কয়েকটি নির্বাচনে যারা বিতর্কিত ছিলেন, তাদের মধ্যে অনেকেই এখন ভোটার তালিকায় রয়েছেন, এমন অভিযোগ উঠেছে। বিএনপির নেতারা স্থানীয় নেতাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, তারা খসড়া তালিকা সংগ্রহ করবেন এবং বিতর্কিত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে জমা দেবেন।
নতুন কমিটি গঠন ও সাংগঠনিক কাঠামো
এছাড়া, বিএনপির কেন্দ্রীয় চিঠি অনুযায়ী, তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ইতোমধ্যে, কিছু জেলা কমিটি স্থগিত করা হয়েছে এবং নতুন কমিটি গঠনের কাজ চলছে। নাটোর, কুমিল্লা (দক্ষিণ) ও শেরপুরসহ কয়েকটি জেলা কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে এবং নতুন কমিটি দেওয়া হয়েছে খুলনা, মাগুরা, মেহেরপুরসহ আরও কিছু জেলায়।
রাজনৈতিক পরিবেশে বিএনপির প্রস্তুতি
এ দীর্ঘ সময় ধরে, বিশেষ করে ২০০৭ সালের পর বিএনপি কঠিন রাজনৈতিক পরিবেশে ছিল। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, এখন দলটি মুক্ত পরিবেশে তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করেছে।