৪৩তম বিসিএসের ভ্যারিফিকেশন প্রক্রিয়া নিয়ে সমালোচনা: সারজিস আলমের প্রতিবাদ


বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক এবং জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মিঃ সারজিস আলম ৪৩তম বিসিএসের পুনঃভ্যারিফিকেশন প্রক্রিয়া নিয়ে তার ফেসবুক পোস্টে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, এই প্রক্রিয়ায় প্রার্থীদের মেধা ও যোগ্যতার বদলে তাদের রাজনৈতিক পরিচিতিকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।

তিনি তার পোস্টে লিখেছেন,
“৪৩তম BCS এর পুনরায় ভ্যারিফিকেশন হয়েছে। ১৬৮ জনকে এই ধাপে বাদ দেওয়া হয়েছে। ১ম ও ২য় ভ্যারিফিকেশন মিলে মোট বাদ পড়েছে ২৬৭ জন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখানো হয়েছে গোয়েন্দা সংস্থার নেগেটিভ রিপোর্ট, অর্থাৎ পলিটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড।”

তিনি প্রশ্ন তোলেন,
“আওয়ামীলীগের সময়ে আওয়ামীলীগ পরিবার ব্যতীত অন্যান্য পলিটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসা যে কারো জন্য এই প্রথম শ্রেণীর সরকারি ভালো চাকরি পাওয়া কঠিন বিষয় ছিল। একই ধরনের একটি চিত্র যদি এখন দেখা যায় তাহলে পার্থক্যটা কোথায়?”

তার বক্তব্যে উঠে আসে আরও গভীর সামাজিক ও নৈতিক প্রশ্ন। তিনি লেখেন,
“যে চাকুরীপ্রার্থী সে যদি নিজ যোগ্যতায় প্রিলিমিনারী, রিটেন, ভাইভা পাশ করে সুপারিশপ্রাপ্ত হয় এবং তার যদি পূর্বে কোনো অপরাধের সাথে সম্পৃক্ততা না থাকে, তাহলে তার বাবা, চাচা, মামা, নানার রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে তাকে চাকরি থেকে বঞ্চিত করা হবে কেন?”

মিঃ আলম অভিযোগ করেন,
“গোয়েন্দা সংস্থার অনেকে এবার ইউনিয়ন আর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি-সেক্রেটারির কাছে বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত চাকুরীপ্রার্থীদের পরিবারের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা জানতে চেয়েছে। এর মানে দাঁড়ায়, একজন মেধাবী তরুণ তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো ব্যয় করে প্রস্তুতি নিয়ে ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পর একজন ওয়ার্ড সভাপতির মতামতের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। তাহলে প্রিলির আগে এই ভ্যারিফিকেশন না করেই বা এত প্রক্রিয়ার প্রয়োজন কেন?”

তিনি আরও উল্লেখ করেন,
“আমার অমর একুশে হলের জাকারিয়া ভাই এডমিন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। তার অক্লান্ত পরিশ্রম, ডিপার্টমেন্ট ফার্স্ট হওয়া, MS-এ CGPA 4.00 থাকা সত্ত্বেও রি-ভ্যারিফিকেশনে বাদ দেওয়া হয়েছে। এমন আরও অনেক উদাহরণ রয়েছে।”

তার বক্তব্যে একটি সামগ্রিক বার্তা ছিল,
“চাকরি হবে মেধার ভিত্তিতে। যে মতাদর্শেরই হোক না কেন, যদি পূর্বে ক্ষমতার অপব্যবহার, অন্যায়, অপরাধের সাথে সম্পৃক্ততা না থাকে, তাহলে নাগরিক হিসেবে সরকারি চাকরি পাওয়া তার সাংবিধানিক অধিকার।”

মিঃ আলমের এই পোস্ট বিসিএস ভ্যারিফিকেশন প্রক্রিয়া নিয়ে একটি নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তার মতামত অনেক চাকরি প্রার্থীর মনে হতাশার সঞ্চার করেছে এবং প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version